এদিকে ঋণ বিতরনের মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এ সময়ের মধ্যে জেলার অনেক সরকারি ও বেসরকারী ব্যাংক এক টাকাও ঋণ বিতরণ করেনি। উদ্যোক্তারা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যোগাযোগ করলে নানা অযুহাত দেখিয়ে তাদেরকে বিদায় করা হয়। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের টিকিয়ে রাখতে মৌলভীবাজার সোনালী ব্যাংকের আওতায় ১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হলেও ৬ অক্টোবর পর্যন্ত বিতরন করা হয়েছে মাত্র ৯০ লক্ষ টাকা, জনতা ব্যাংক ১ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও বিতরন করা হয়েছে মাত্র ৩৫ লক্ষ টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের আওতায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ আসলে বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ৫১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, রূপালী ব্যাংকের আওতায় ৪৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আসলে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিতরণ করেন মাত্র ২৫ লক্ষ টাকা।
সরজমিনে জানা যায়, হাওরপাড়ের মানুষের জীবন জীবিকা এক ফসলি বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল। প্রায় প্রতি বছরই অতি বৃষ্টি, খড়া এবং বন্যার কারনেও কৃষকদের বোরো ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতিগস্থ হন কৃষকরা। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে হাওরপাড়ের প্রান্তিক ও ছোট কৃষকদের এবং বর্গা চাষীরা অনেকেই গড়ে তুলেন ছোট ছোট গরুর খামার। যাদের স্বামর্থ নেই অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার করে ৩ থেকে ৫ টি গরু ক্রয় করার। খামারিদের অনেকেই জানান, পুঁজি সংকটের কারণে গরুর সংখ্যা বাড়াতে পারছেন না। ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ পেলে তারা আরও বেশি গরু লালন-পালন করতে পারতেন।
এবিষয়ে একাধিক উদ্যোক্তাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, করোনা মহামারিতে পুঁজি সব হারিয়েছি। পরিবার নিয়ে দু’মুটো ভাত খাওয়া অনেকটা কষ্টসাধ্য। ব্যবসায়ী হিসেবে সমাজে পরিচিত থাকায় কারো কাছে হাতও পেততে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর ঋণ নেয়ার জন্য একাধিক ব্যাংকে গেলে কোনো সহযোগীতা পাইনি। অনেক ব্যাংক ঋণ দিতে অনিয়া প্রকাশ করে।
মৌলভীবাজার সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম দুলন কান্তি চক্রবর্তী বলেন, জামানত ছাড়া আমাদের ব্যাংকে ঋণের কোন সুবিধা নেই। সোনালী ব্যাংকে সহজ শর্ত বলে কোন শব্দ নেই ।
মৌলভীবাজার জনতা ব্যাংকের ডিজিএম দেবাশীষ দেব বলেন, কিছু ঋণ দেয়া হয়েছে বাকীগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেয়া হবে।
এবিষয়ে উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প মৌলভীবাজারের প্রশিক্ষক সমন্বয়ক মোঃ নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, প্রতিটি ব্যাংকই ঋণ বিতরণের বিষয়টিকে জটিল করে রেখেছে। উদ্যোক্তারা ব্যাংকে গেলে কোনো না কোনো কারণ দেখিয়ে বিদায় করে দেয়া হয়। যার ফলে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে না।